দুয়ারে রবীন্দ্রনাথ, খুদের দল মাতল গানে-কবিতায়



দুয়ারে রবীন্দ্রনাথ, খুদের দল মাতল গানে-কবিতায়




 ভ্রাম্যমাণ রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী!




আর পাঁচটা অনুষ্ঠানের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা। পঁচিশে বৈশাখ সকালে ওঁরা চার জন হাতে তুলে নিয়েছিলেন কবির ছবি। ঘুরেছেন এ বাড়ি থেকে ও বাড়ির দরজায়। ওঁরা পৌঁছতেই ঘর থেকে বেরিয়ে এল খুদে শিল্পীরা। কখনও বড়রাও। বাড়ির দরজায় রবীন্দ্রনাথের ছবিতে মালা দিয়ে খুদে শিল্পীদের কেউ করল গান, কেউ বা কবিতা। এর মাঝেই দেওয়া হল করোনা নিয়ে সচেতনতার বার্তা। এ বার গন্তব্য অন্য বাড়ি। এ ভাবেই গ্রাম জুড়ে চলল কবি প্রণাম।




যে এলাকার নাম শুনলেই রাজ্যবাসীর মনে পড়ে বোমা-বারুদের কথা, সেই পাড়ুই থানা এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম মহুলা। সেই গ্রামেই লকডাউনের মাঝে সকাল থেকেই শুরু হল রবীন্দ্র চর্চা। গ্রামবাসীদের মধ্যে রবীন্দ্র চিন্তার বীজ বুনেছে অবশ্যই বিশ্বভারতী। শ্রীনিকেতন ব্লকে পল্লী সম্প্রসারণ কেন্দ্রের অধীনে যে ৫৫টি গ্রামে পল্লী উন্নয়নের কাজ চলছে, তার অন্যতম গ্রাম মহুলা। গ্রামের ‘মহুলা মনসামাতা যুব সঙ্ঘ’ ক্লাবের উদ্যোগে চলে একটি গ্রামীণ গ্রন্থাগারও। বিশ্বভারতীর পল্লী সম্প্রসারণ কেন্দ্রের অধ্যাপক সুজিতকুমার পালের আগ্রহে কয়েক বছর ধরেই ওই গ্রামে ঘটা করে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী পালিত হয়। কিন্তু এ বছর করোনা ভাইরাসের জন্য সব বন্ধ। ঘরবন্দি হয়ে মন খারাপ সুজাতা, ঝিলিক, ভাগ্য, অভিজিৎদের। প্রতিবার গ্রন্থাগারের অনুষ্ঠানে কবিতা বলে ওরা। এ বার কী করে হবে সব? মুশকিল আসান গ্রামেরই দাদা-দিদিরা। সকালবেলায় রবীন্দ্রনাথের ছবিতে মালা পরিয়ে ওঁরা পৌঁছে গেলেন ওদের বাড়ির দরজায়।




গ্রামের পূর্ব পাড়ায় থাকে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী সুজাতা তপাদার। তার বাড়ির সামনে রবীন্দ্রনাথের ছবি নিয়ে হাজির কলেজ পড়ুয়া দিদি অপর্ণা দাস। সুজাতা ছুটে গিয়ে বাড়ির ভিতর থেকে ডেকে নিয়ে এল মাকে। তার পর রবি ঠাকুরের ছবিতে মালা দিয়ে মনের আনন্দে পাঠ করল রবীন্দ্র কবিতা ‘বহু দিন পরে’।




কবিতা শেষ হতে গন্তব্য অন্য বাড়ি। এ বার ছবি তুলে নিলেন কলেজ পড়ুয়া গৌরহরি দাস। রবীন্দ্রনাথ বাড়ির দরজায় আসছেন জেনে আগেই দরজায় ফুল মালা নিয়ে হাজির চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ঝিলিক দাস। ছবির পাশে দাঁড়িয়ে ‘সবার আমি ছাত্র’ কবিতাটি বলে কবি প্রণাম জানাল সে।




অনুষ্ঠানের মাঝে গ্রামের ছেলে সুশান্ত পাত্র, ক্লাবের সম্পাদক জয়ন্ত তপাদাররা গ্রামের বাসিন্দাদের করোনার মাঝে ভালো থাকার বার্তা দিলেন। এ ভাবেই সারা গ্রামের ২০টি বাড়ি ঘুরলেন রবীন্দ্রনাথ। গ্রন্থাগারিক সুশান্ত পাত্র বলেন, ‘লকডাউনের মাঝে গ্রামের সকলকে আনন্দ দিতেই আমাদের এই উদ্যোগ। রবীন্দ্রনাথকে সামনে রেখে বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনা রুখতে সচেতনও করা হল গ্রামের সকলকে।’




আরও পড়ুন: করোনার গ্রাসে বাংলা LIVE: চিন্তা বাড়াচ্ছে হাওড়া ও কলকাতা, শিক্ষামন্ত্রী-উপাচার্য ভিডিয়ো বৈঠক আজ





এখন বাংলা - Ekhon Bengla | খবরে থাকুন সবসময়


Source : BanglaSonbad


নবীনতর পূর্বতন