ধেয়ে আসছে আমফান ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ধান চাষীরা

ধেয়ে আসছে আমফান ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ধান চাষীরা

অমিয় ঘোষ ,মালদা:- এই মুহূর্তে কৃষকের বুক ভরা আশা ও চোখে সোনালি স্বপ্নের ঝিলিক। আর ফসল উঠবে ঘরে, সংসারে আসবে সচ্ছলতা। বিস্তীর্ণ মাঠে যত দূর চোখ যায়, বাতাসে দোল খায় সোনার রং রঙীন ধান গাছ। আর দিগন্তে ছড়িয়ে পড়ে পাকা ধানের সুগন্ধে।এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। মাঠে ধুম লেগেছে ধান কাটার। এরই মধ্যে প্রকৃতির বাগড়া করতে শুরু করেছে। আকাশের কালো ঘন মেঘ শঙ্কা বাড়িয়েছে কৃষকের । আবহাওয়া দফতর ঘোষণা করেছে প্রচুর গতিবেগ নিয়ে ধেয়ে আসছে আমফান। তার প্রভাবে মালদা জেয়ার আজ সকাল থেকেই মেঘলা আকাশ ছিল । মাঝে মাঝেই বৃষ্টি হচ্ছে ।কৃষকরা আশঙ্কা করছে যে শিলাবৃষ্টি হলেও হতে পারে। শিলাবৃষ্টি এক দফা আতঙ্ক ছড়িয়ে গেছে। এবার আমফানের পালা। এ সপ্তাহে ঘন বৃষ্টি হতে পারে, এমন সতর্কতা সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের।

গতকাল সকাল ১০টার দিকে ঝাওয়ার দেখা যায়, ধান কাটছেন কৃষকরা। তবে আবহাওয়া বিরূপ থাকায় বজ্রপাতের ভয়ে অনেক শ্রমিকই ফাঁকা মাঠে ধান কাটতে আগ্রহী নন। বৃষ্টি শুরু হলে শ্রমিকদের দৌড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটতে দেখা গেছে। ঝাওয়ার হাওরের কৃষক মনরঞ্জন মন্ডল(পিন্টুর বাবা) বলেন, আমার অর্ধেক জমি ১৫ দিন আগেই রোগে নষ্ট হয়েছে। বাকি জমির ধান এখন সম্পূর্ণ পেকেছে। কিছু কাটতে পেরেছি। বেশিরভাগ জমির ধানই পরে রয়েছে।

আর এক চাষী বিশ্বনাথ মন্ডল(কমলের বাবা) বলেন, করোনা ভাইরাসের কারনে ধান কাটার শ্রমিকের অভাব দেখা দিয়েছে।আমার বাড়ির সকল সদস্যদের নিয়েও সম্পূর্ণ ধান কেটে উঠতে পারে নি। এই অবস্থায় যদি বৃষ্টি হয় তাহলে জমিতে ধান নষ্ট হয়ে যাবে।এখনো ক্ষেতে অনেক ধান পড়ে আছে। বজ্রপাতের ভয়ে এখন শ্রমিকরা ধান কাটতে চান না বলেও জানান তিনি।
গাজলের বাবুপুরের কৃষক বলরাম রায়(কমল রায়ের বাবা) বলেন, জমি থেকে ঠিকই ধান কেটে এনে মাঠে রেখেছি। কিন্তু বৃষ্টির কারণে ধান মাড়াই করতে পারছি না। মাড়াই করতে না পারলে ধান পচে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।এখন যদি ভারি বৃষ্টিপাত হয়, তাহলে এখনো যেসব জমিতে আধা পাকা অবস্থায় ধান রয়েছে সেগুলো তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বৃষ্টির কারণে মাঠে রাখা ধান শুকাতে পারছেন না কৃষকরা। আরো যদি বৃষ্টিপাত হয় তাহলে এগুলোও নষ্ট হয়ে যাবে।

বৃষ্টিতে নাকাল কৃষক দুলাল ঘোষ (নারিদীরা গৌরীপুর) থেকে জানান, চলতি মৌসুমে হাওরে বোরোর বাম্পার ফলন হওয়ার পরও শ্রমিক সংকট এবং সকাল-সন্ধ্যা ঝড়সহ মুষলধারে বৃষ্টি কৃষকের স্বপ্ন পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে শ্রমিককে বেশি মজুরি দিয়ে পাকা ধান কেটে এনে শুকাতে না পারায় ঘরের ভেতর পচে নষ্ট হতে বসেছে সোনালি ধান।চড়া মজুরি দিয়ে ধান কাটানোর পরও ঝড়-বৃষ্টির কারণে শুকানো যাচ্ছে না। রোদের অভাবে ঘরে পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
কৃষি অধিকর্তা বলেন, জেলার সার্বিক ৬৫ ভাগ এবং হাওরের প্রায় ৭৮ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে। বর্তমানে রাতে এবং সকালে দুয়েক ঘণ্টা বৃষ্টি হয়। এতে তেমন কোনো ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। হয়তোবা আজকের কাটা ধান আগামীকাল শুকাতে হচ্ছে।

মালদা অধিদপ্তরের মতে, জেলায় এবার ২ লাখ ২২ হাজার ২৯৪ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। এ থেকে ৮ লাখ ৭৫ হাজার ৩৫৯ টন চাল উৎপাদন হওয়ার কথা। কৃষি বিভাগের মতে, এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৫ ভাগ জমির ধান কাটা হয়ে গেছে। বিআর-৩৯ ধান পাকতে বিলম্ব হওয়ায় হাওরে এ ধানই পড়ে আছে। তবে কৃষকরা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত তারা অর্ধেক জমির ধান কেটেছেন। ধান বিলম্বে পাকায় এবং যথাসময়ে শ্রমিক না পাওয়ায় অর্ধেক পাকা ধান ক্ষেতে পড়ে আছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস পেয়ে এখন শঙ্কিত কৃষকরা।


আরোও দেখুন:-


এখন বাংলা - Ekhon Bangla | খবরে থাকুন সবসময়
এখন বাংলা, পশ্চিমবঙ্গের একমাত্র নির্ভীক পোর্টাল। আমরা আমাদের পাঠকদের কে সর্বদা সত্য খবর দিতে বধ্য পরিকর। স্থানীয়, রাজ্য, দেশ, দুনিয়া ও বিভিন্ন ধরনের খবর জানতে চোখ রাখুন এখন বাংলা ওয়েবসাইটে।

(স্বভাবতই আপনি আপনার এলাকার নানান ঘটনার সাক্ষী, দেরি না করে শেয়ার করুন আমাদের সাথে।  ঘটনার বিবরণ দিন, ছবি এবং ভিডিয়ো থাকলে দিতে পারেন আমাদের ইমেলে , ekhonbanglaofficial@gmail.com ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আমাদের ওয়েবসাইটে যদি কোন রকম বিজ্ঞাপন দিতে চান তবে যোগাযোগ করুন  9476288780 এই নম্বরে, ধন্যবাদ।
নবীনতর পূর্বতন