লন্ডভন্ড কলকাতা, ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙে পড়েছে প্রায় ৫০০০ গাছ
বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে যাঁরা ঘরের দরজা এঁটে দমবন্ধ করে সর্বনাশের প্রহর গুনছিলেন, পরদিন সকালে উঠে তাঁরা দেখলেন সুপার সাইক্লোনের ধ্বংসলীলা। দেখা গেল, উদ্দাম হামলা চালিয়ে ধ্বংসাত্বক ছবি। যা কিনা আগে কখনও দেখেনি বাংলা। শহরের যে দিকেই তাকান না কেন, শুধু ধ্বংসের ছবি। যত্রতত্র পড়ে আছে গাছ, লাইটপোস্ট। সিগন্যালিং পোস্ট ভেঙে চুরমার। শহরের একাধিক রাস্তায় জমে জল।
আরোও পড়ুন
এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার বিধ্বস্ত কলকাতা সরজমিনে দেখতে রাস্তায় নামেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বিপর্যস্ত শহর ঘুরে দেখার পর কলকাতার পুর প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সারা কলকাতা লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। দু-তিনশ গাছ পড়বে ভেবেছিলাম, কিন্তু পাঁচ হাজারেরও মত গাছ পড়েছে বলে দাবি তাঁর।
ফিরহাদ বলেন, এখন মূল লক্ষ্য হাসপাতাল-শ্মশান ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ যাবার রাস্তা গুলো দ্রুত পরিষ্কার করা। আর তা করতে পুরসভার কর্মীরা দিন-রাত কাজ করছেন বলে মন্তব্য করেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী। পুরো বিষয়টি খোদ মুখ্যমন্ত্রীও তদারকি করছেন বলে মন্তব্য তাঁর। শহরে প্রথমে মূল রাস্তাগুলো কেটে সরানোর চেষ্টা হচ্ছে। মন্ত্রী জানিয়েছেন, আজ শুক্রবার থেকে ছোট রাস্তা-ভেতরের রাস্তা এবং বাড়ির ওপরে থাকা গাছগুলো সরানোর কাজ শুরু হবে।
কলকাতার পাশাপাশি লণ্ডভণ্ড অবস্থা সল্টলেকেরও। পুরসভার প্রাথমিক খতিয়ান বলছে, শুধু সল্টলেকেই দুই থেকে আড়াই হাজার গাছ পড়ে গিয়েছে। বহু জায়গায় রাস্তা এখনও আটকে রয়েছে৷ পুরসভার বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছে, কিন্তু পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হতে অন্তত সাতদিন সময় লেগে যেতে পারে। এছাড়াও প্রায় তিন শতাধিক ল্যাম্পপোস্ট হয় পুরো উপড়ে গিয়েছে, নতুবা অর্ধেক ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগ এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক সংস্থার কর্মীরা যুদ্ধকালীন অবস্থায় পরিস্থিতি ঠিক করার কাজ করছেন। কিন্তু, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত বহু জায়গাতেই বিদ্যুৎ বা মোবাইল সংযোগ চালু হয়নি।
রাজারহাট-নিউটাউনের দিকে এদিন বিকেল পর্যন্ত কোনও মোবাইল সংযোগ প্রায় ছিল না। সল্টলেক সহ বিধাননগর পুর এলাকার প্রায় ৫০০’র বেশি বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে গিয়েছে। বহু জায়গায় বাড়ির ছাদ উড়ে যাওয়ায় রাতেই বাসিন্দাদের স্থায়ী বা অস্থায়ী সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নিতে হয়েছে। পুরসভা সূত্রের দাবি, বিধাননগরে সবমিলিয়ে এক হাজার মানুষকে এই কেন্দ্রগুলিতে রাখার ব্যবস্থা করতে হয়।
বুধবার থেকে প্রায় ২৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে কলকাতায়। কোথাও কোথাও সিএসসির ওয়াটার লগিং এলাকায় নজর রাখতে বলা হয়েছে। ড্রেনেজ পাম্পিং স্টেশনে অনেক জায়গায় জল ঢুকে গিয়েছে। ফলে দ্রুত জল বের হতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, অনেক ঝড় দেখেছে শহর। কিন্তু এমন ভয়ঙ্কর ঝড় কবে দেখেছেন সাধারণ মানুষ তা একবারে অনেকেই মনে করতে পারেননি। আমফানের জেরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে রাজ্য জুড়ে। সুপার সাইক্লোনের দাপটে প্রাণ গিয়েছে বহু মানুষের৷ বৃহস্পতিবার রাজ্যে আমফানে মৃতদের পরিবারকে আড়াই লক্ষ টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এখন বাংলা - Ekhon Bangla | খবরে থাকুন সবসময়
এখন বাংলা, পশ্চিমবঙ্গের একমাত্র নির্ভীক পোর্টাল। আমরা আমাদের পাঠকদের কে সর্বদা সত্য খবর দিতে বধ্য পরিকর। স্থানীয়, রাজ্য, দেশ, দুনিয়া ও বিভিন্ন ধরনের খবর জানতে চোখ রাখুন এখন বাংলা ওয়েবসাইটে।
(স্বভাবতই আপনি আপনার এলাকার নানান ঘটনার সাক্ষী, দেরি না করে শেয়ার করুন আমাদের সাথে। ঘটনার বিবরণ দিন, ছবি এবং ভিডিয়ো থাকলে দিতে পারেন আমাদের ইমেলে , ekhonbanglaofficial@gmail.com ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)