Telegram Group Join Now
WhatsApp Group Join Now


সচেতনতার প্রচারে অভিনবত্বের ছোঁয়া, করোনা-মূর্তি বানিয়ে তাক লাগালেন মালদহের মৃৎশিল্পী



সচেতনতার প্রচারে অভিনবত্বের ছোঁয়া, করোনা-মূর্তি বানিয়ে তাক লাগালেন মালদহের মৃৎশিল্পী




 করোনা নিয়ে যাত্রাপালা, ছৌ-পালা, আলপনা, ছবি আঁকা। শহরের রাজপথে ছদ্মবেশে করোনা সেজে সচেতনতার গান। বিশ্বত্রাসের ‘কৃপায়’ অনেক কিছুই দেখল বাংলা। এবার নতুন সংযোজন, করোনা-মূর্তি।




করোনা নিয়ে এবার মূর্তি তৈরি করে ফেললেন মালদহের মানিকচকের মৃৎশিল্পী উজ্জ্বল দাস। না, পুজো নয়। করোনা রুখতে সচেতনতামূলক প্রচারের জন্য পুলিশ প্রশাসন যে ট‍্যাবলো রাস্তায় বের করতে চলেছে, সেখানেই আপাতত ঠাঁই পাবে উজ্জ্বলের হাতে গড়া এই করোনা-মূর্তি। তারপর পুতুলের মতো ছোট ছোট মূর্তি তৈরির ভাবনাও রয়েছে শিল্পীর। পৃথিবীজুড়ে যে বিভীষিকা নেমে এসেছে, তার স্মৃতি হিসাবে অনেকেই ছোট ছোট করোনা-মূর্তি বাড়িতে রাখতে পারেন। শিশুদের খেলার সাথীও হতে পারে করোনা ভাইরাসের পুতুল মূর্তি। তাই ভাল বিক্রি হওয়ার আশাও করছেন শিল্পী। এই আশায় রুজিরটির তাগিদে নতুন করে বুক বাঁধছেন লকডাউনে কাজ হারানো মৃৎশিল্পী উজ্জ্বল দাস। মানিকচকের মথুরাপুর বাজারপাড়ায় বেশ কয়েকটি মৃৎশিল্পী পরিবার রয়েছে। উজ্জ্বলের করোনা মূর্তি তৈরির কথা ইতিমধ্যে তাঁরাও জেনে গিয়েছেন। তাঁরাও এই কাজ করার ইচ্ছের কথা জানিয়েছেন। লকডাউনে অনটন ঘোঁচাতে এটাই হয়তো মৃৎশিল্পীদের কাছে উত্তম রাস্তা। আশাবাদী উজ্জ্বলও।




লকডাউনে এবার বিক্রি হয়নি বাসন্তীপুজোর প্রতিমা। হালখাতা না হওয়ায় বিক্রি হয়নি লক্ষ্মী-গণেশের মূর্তিও। রামনবমী থেকে অক্ষয়-তৃতীয়া, সবই মাটি হয়েছে। প্রতিমা তৈরি করে বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে রয়েছে মালদহের মানিকচকের মৃৎশিল্পীদের। টান পড়েছে সংসারে। পেটেও। দু’বেলা ঠিকমতো খাবার জুটছে না। লকডাউনে পুরোপুরি কর্মহীন। রেশন থেকে পাওয়া চাল কিছুটা বাঁচিয়ে রেখেছে। এমন পরিস্থিতিতে করোনা নিয়ে কিছু গড়ার ভাবনাচিন্তা করছিলেন মানিকচকের মৃৎশিল্পী উজ্জ্বল দাস। তারই ফল করোনা-মূর্তি। কাজ শুরু করতেই বরাত হাজির। মানিকচক থানার ওসি গৌতম চৌধুরি শিল্পীকে ডেকে জানান, পুলিশের সচেতনতার ট‍্যাবলোয় এই করোনা নিয়ে একটা মূর্তি চান। প্রথম অর্ডার এটাই। রুজি রোজগারের তাগিদে করোনা ভাইরাসের মূর্তি বানিয়ে উপার্জনের পথ বেছে নিতে চলেছেন মানিকচকের মৃৎশিল্পীরা। উজ্জ্বলের ডেরায় অদ্ভুত আকৃতির এই ভাইরাসের মূর্তি তৈরি দেখতে অনেকেই ভিড় করছেন। করোনা ভাইরাসের আকৃতি সম্পর্কে গ্রামের শিল্পীদের তেমন কিছু জানা ছিল না। যে ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ও সংবাদ মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে, সেটিকে অনুসরণ করেই করোনা মূর্তি তৈরি করে তাক লাগিয়েছেন শিল্পী।




মথুরাপুর গ্রামের মৃৎশিল্পী উজ্জ্বল দাস ১০ বছর ধরে বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি তৈরির কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। বাড়িতে স্ত্রী-সন্তান ছাড়াও রয়েছেন বৃদ্ধ বাবা-মা, ভাই-বোনেরা। গোটা পরিবার মৃৎশিল্পের রোজগারের উপর নির্ভরশীল। বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি গড়ে সারাবছর উপার্জন করে থাকেন উজ্জ্বলবাবু। কিন্তু করোনা ভাইরাসের জেরে এখন সব বন্ধ। হাতে কোনও কাজ নেই। তাই নিজের থেকেই চিন্তাভাবনা শুরু করেছিলেন, করোনা ভাইরাসের মূর্তি তৈরি করলে কেমন হয়? পুলিশের টহলদারির সময় নজরে আসে উজ্জ্বলবাবুর তৈরি করোনা ভাইরাসের মূর্তি। লম্বায় প্রায় ৫ ফুট। মাটি ও কাপড় দিয়ে তৈরি। রঙের প্রলেপে অনেকটা হুবহু সেই ভাইরাসের মতোই দেখাচ্ছে। সেই মূর্তির ট্যাবলো বানিয়ে ব্লকের মানুষের কাছে সচেতনতামূলক প্রচার করা হবে বলে জানিয়েছে মানিকচক থানার পুলিশ। কিছুটা হলেও মুখে হাসি ফুটেছে মৃৎশিল্পী উজ্জ্বল দাসের। আশায় বুক বাঁধছেন পড়শি শিল্পীরাও।





এখন বাংলা - Ekhon Bengla | খবরে থাকুন সবসময়


Source : sangbadpratidin


নবীনতর পূর্বতন
Google News Follow Now
WhatsApp Channel Follow Now