কালীপুজোয় মদ-মাংস লাগে, জানুন শাস্ত্রে এর কারণ
নিউজ ডেস্ক: ‘নির্বাণতন্ত্র’-এ বলা হয়েছে মদ্য, মাংস, মৎস্য, মুদ্রা ও মৈথুন— এই পাঁচটি পঞ্চম-কার। সাধকরা এই পঞ্চম-কার দিয়ে শক্তি আরাধনা করে থাকেন। অদ্বৈতভাব পরায়ণ ব্রহ্মনিষ্ঠ সাধকই পঞ্চতত্ত্বযুক্ত সাধনার অধিকারী। পঞ্চতত্ত্বের মধ্যে পঞ্চমহাভূতকে দেখানো হয়েছে।
পঞ্চতত্ত্বের তিনটি প্রকারভেদ রয়েছে। ১. প্রত্যক্ষতত্ত্ব ২. অনুকল্পতত্ত্ব ৩. দিত্বতত্ত্ব।
প্রত্যক্ষতত্ত্বে মদ প্রসঙ্গে ‘পরশুরামকল্পসূত্র’-এ তাল খেজুর প্রভৃতি গাছের রস থেকে উৎপন্ন বা গাছের ছাল বা ফুল থেকে তৈরি মদের কথা বলা হয়েছে। অনুকল্পতত্ত্বের ব্যাখ্যায় মদ প্রসঙ্গে কাঁসার পাত্রে নারকেলের জল বা তামার পাত্রে দুধ প্রভৃতি বলা হয়েছে। দিব্যতন্ত্রের ব্যাখ্যায় মদ প্রসঙ্গে ‘ভৈরব যামল’-এ বলা হয়েছে, ব্রহ্মরন্ধ্রস্থিত সহস্রারপদ্মস্থ চন্দ্রকলা থেকে বিগলিত অমৃতধারাই সাধকের পেয়সুধা।
কোন কোন জন্তুর মাংস প্রশস্ত তন্ত্রে তার উল্লেখ রয়েছে। এই সব প্রাণীদের মধ্যে ছাগ, মেষ, সজারু, হরিণ, সারস, হাঁস, বন্যকুক্কুট প্রভৃতির কথা বলা হয়েছে। তন্ত্রমতে, শাল, বোয়াল ও রোহিত— এই তিন রকমের মাছ উত্তম। কাঁটাশূন্য তৈলাক্ত মাছ মধ্যম ও মৎস্যক্ষুদ্র হলে অধম। তন্ত্র মতে, যা চর্বণীয় তাই মুদ্রা। যেমন ছোলা বা মাষকলাই দিয়ে তৈরি ঘি অথবা তেলে ভাজা দ্রব্য মুদ্রা। আর যুগলের সংযোগে মৈথুন। সাধনার অঙ্গীভূত মুখ্য মৈথুন শিবস্বরূপ সাধকের সঙ্গে শিবস্বরূপিনী সাধিকার সংযোগ।
অনুকল্পতত্ত্বের ব্যাখ্যায় ‘ডামরতন্ত্র’ মতে, মাংসের অনুকল্প পিঠে। কৌলাবনী নির্ণয় অনুসারে মহিষদুগ্ধ, গোদুদ্ধ, ছাগদুগ্ধ এবং ফলমূল দগ্ধ হলেই আমিষ হয়ে যায়। নৈবেদ্যই মুদ্রা। আর মৈথুন প্রসঙ্গে ‘যোগিনীতন্ত্র’ বলা হয়েছে, রক্তকরবী লিঙ্গপুষ্প এবং কৃষ্ণ অপরাজিতা যোনিপুষ্প। এই উভয়ের সংযোগ পঞ্চমতত্ত্বের অনুকল্প।
দিব্যতত্ত্বের ব্যাখ্যায় মাংস প্রসঙ্গে ‘কুলার্ণবতন্ত্র’-এ বলা হয়েছে— জ্ঞান খড়গের দ্বারা পূণ্যাপুণ্য রূপ পশুকে বধ করে পরশিবে চিত্ত লয় করার নাম ‘মাংস’। ‘মৎস্য’ প্রসঙ্গে ‘আগমসার’-এ বলা হয়েছে— গঙ্গা ও যমুনার মধ্যে দু’টি মৎস্য সর্বদা ঘুরে বেড়াচ্ছে। যিনি মৎস্য দু’টি ভক্ষণ করতে পারেন তিনি মৎস্য সাধক। গঙ্গা ও যমুনা হচ্ছে ইড়া ও পিঙ্গলা নাড়ী। মাছদু’টি ইড়া ও পিঙ্গলাতে প্রবাহিত নিঃশ্বাস ও প্রশ্বাস। যিনি কুম্ভক করে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস রোধ করতে পারেন, অর্থাৎ এইভাবে মনস্থির করতে পারেন, তিনি মৎস্যসাধক। অসৎসঙ্গ পরিত্যাগকে ‘মুদ্রা’ বলা হয়। আর সাধক দেহে শিব-শক্তি মিলনই মৈথুন।
পঞ্চতত্ত্ব সাধনা অদ্বৈতভাবের সাধনা। একমাত্র গুরুর কাছেই এই সাধনার ক্রিয়াকলাপ শিখতে হয়।
এখন বাংলা - খবরে থাকুন সবসময়
এখন বাংলা, পশ্চিমবঙ্গের একমাত্র নির্ভীক পোর্টাল। আমরা আমাদের পাঠকদের কে সর্বদা সত্য খবর দিতে বধ্য পরিকর। স্থানীয়, রাজ্য, দেশ, দুনিয়া ও বিভিন্ন ধরনের খবর জানতে চোখ রাখুন এখন বাংলা ওয়েবসাইটে।
(স্বভাবতই আপনি আপনার এলাকার নানান ঘটনার সাক্ষী, দেরি না করে শেয়ার করুন আমাদের সাথে। ঘটনার বিবরণ দিন, ছবি এবং ভিডিয়ো থাকলে দিতে পারেন আমাদের ইমেলে , ekhonbanglaofficial@gmail.com ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)