TET News: এক লক্ষ শিক্ষকের চাকরি কি সত্যিই ঝুঁকিতে? রাজ্যের নতুন পদক্ষেপে বাড়ল আশার আলো
পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় এক ধরনের অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যেই ৩২ হাজার প্রাইমারি শিক্ষকের চাকরি আদালতের রায়কে কেন্দ্র করে অনিশ্চিত হয়ে রয়েছে। তারই মধ্যে আরও এক লক্ষের বেশি শিক্ষকের চাকরি নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন দুশ্চিন্তা। কারণ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ— TET (Teacher Eligibility Test) পাস না করলে প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে আর চাকরি করা যাবে না।
এই নির্দেশ কার্যকর হলে রাজ্যের প্রায় এক লক্ষ শিক্ষক হয়তো চাকরি হারানোর মুখে পড়তে পারেন। অনেক স্কুলেই শিক্ষক সংকট তৈরি হবে, প্রভাব পড়বে ছাত্রদের পড়াশোনায়। এই সংকটের মাঝেই রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নবান্ন ইতিমধ্যেই এর জন্য সবুজ সংকেত দিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের রায়: কী বলা হয়েছে?
বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহর বেঞ্চ সম্প্রতি রায়ে জানিয়েছেন— পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত প্রাথমিক শিক্ষককে আগামী দুই বছরের মধ্যে TET পাস করতে হবে। NCTE-র নিয়ম অনুযায়ী ডি.এল.এড প্রশিক্ষণের পাশাপাশি TET পাস করাও বাধ্যতামূলক।
যাঁদের অবসরের জন্য পাঁচ বছরের কম সময় বাকি, তাঁদের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাকিদের ক্ষেত্রে নিয়ম কঠোর। এই নির্দেশ কার্যকর হলে রাজ্যে প্রাথমিক শিক্ষায় বড় ধাক্কা লাগার সম্ভাবনা রয়েছে।
কেন বিপদে পড়বেন এক লক্ষ শিক্ষক?
স্কুল শিক্ষা দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে প্রায় এক লক্ষ শিক্ষক আছেন যারা TET পাস করেননি। অনেকে বহু বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন, কিন্তু দীর্ঘ ব্যবধানে আবার পরীক্ষায় বসা তাঁদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। বয়স, পারিবারিক দায়িত্ব এবং পড়াশোনার বাইরে দীর্ঘ বিরতি— সব মিলিয়ে অনেকের পক্ষেই TET পাস করা বাস্তবে বড় চ্যালেঞ্জ।
রাজ্যের যুক্তি: কেন প্রয়োজন রিভিউ পিটিশন?
রিভিউ পিটিশনে রাজ্য সরকার মূলত তিনটি যুক্তি তুলে ধরতে চলেছে—
১. পুরনো ব্যবস্থায় নিয়োগ
২০১১ সালের আগের নিয়োগে TET বাধ্যতামূলক ছিল না। তখন নিয়োগ হত AICTE-র নিয়ম অনুযায়ী। এত বছরের পরিষেবা দেওয়া শিক্ষকদের হঠাৎ করে নতুন নিয়মে বাঁধা অযৌক্তিক বলে দাবি রাজ্যের।
২. অভিজ্ঞ শিক্ষকদের মানসিক চাপ
দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও আবার পরীক্ষায় বসতে বাধ্য করা অনেকের উপরেই অতিরিক্ত চাপ তৈরি করবে। অভিজ্ঞ শিক্ষকরা চাকরি হারালে তার প্রভাব পড়বে শিক্ষার মানের উপরও।
৩. ২০০৯ সালের অভিজ্ঞতা
আগের ব্রিজ কোর্স বাধ্যতামূলক করার সময় যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল, রাজ্যের দাবি— সেই ভুল এবার যেন না হয়।
শিক্ষক সংগঠন কী বলছে?
রাজ্যের বহু শিক্ষক সংগঠন ইতিমধ্যেই এই নিয়মের বিরুদ্ধে সরব। তাঁদের যুক্তি— বহু বছর সৎভাবে দায়িত্ব পালন করার পর তাঁদের চাকরি চলে যাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত অমানবিক। কিছু সংগঠন ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ আবেদনও জমা দিয়েছে।
রাজ্যের পরবর্তী পদক্ষেপ
নবান্ন সূত্রে খবর, অ্যাডভোকেট জেনারেল এবং শিক্ষা দপ্তরের কর্তারা রিভিউ পিটিশনের খসড়া তৈরি করছেন। আগামী সপ্তাহেই এটি সুপ্রিম কোর্টে জমা পড়তে পারে। রাজ্যের আশা— মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে আদালত এই সিদ্ধান্ত নতুন করে বিবেচনা করবে। তাতে বহু শিক্ষক চাকরি বাঁচাতে পারবেন এবং সরাসরি উপকৃত হবে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা।
এখন সবার চোখ সুপ্রিম কোর্টে
রাজ্য সরকারের রিভিউ আবেদন গ্রহণ করলে বহু শিক্ষকের মুখে ফিরতে পারে স্বস্তি। আর যদি আবেদন খারিজ হয়— তবে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থাকে সামনে দাঁড়াতে হতে পারে এক বড় সংকটের মুখে।
শিক্ষক, ছাত্র, অভিভাবক— সকলের চোখ এখন সুপ্রিম কোর্টের আগামী সিদ্ধান্তে।
আরোও পড়ুন লক্ষী ভান্ডার এখন অতীত! নারায়ণ ভান্ডার প্রকল্পের মাধ্যমে প্রত্যেককে 2000 করে টাকা দেওয়া হবে
আরোও পড়ুন মাত্র ২৪৯ টাকায় ৪৫ দিনের প্ল্যান! BSNL-এর নতুন অফারে টেলিকম দুনিয়ায় হইচই
আরোও পড়ুন WB Govt Employee: রাজ্যের সরকারি কর্মীদের জন্য সুখবর? ১০% ডিএ বৃদ্ধির সম্ভাবনা!
TET News: এক লক্ষ শিক্ষকের চাকরি কি সত্যিই ঝুঁকিতে? | এখন বাংলা - Ekhon Bangla
আশা করি এই পোস্টটি বা " TET News: এক লক্ষ শিক্ষকের চাকরি কি সত্যিই ঝুঁকিতে? "এখন বাংলা - Ekhon Bangla থেকে আপনি উপকৃত হবেন। প্রতিদিন সব খবর সবার আগে জানতে এখন বাংলা বা www.ekhonbangla.in ওয়েবসাইট দেখুন অথবা আমাদের Google News এ (Follow Us) ফলো করুন এবং আমাদের Telegram Channel Follow, WhatsApp Channel Follow করুন, ধন্যবাদ।
%20(1).jpg)