লক ডাউন পালনে 'বাড়াবাড়ি', শাস্তি পেলেন আইসি, ৫
লক ডাউন পালনের নামে কোথাও পুলিশকে দেখা গিয়েছে মানুষকে লাঠিপেটা করতে, কোথাও সবজির ঝুড়িতে লাথি মারতে।
নিউজ ডেস্ক: করোনা মোকাবিলায় দেশজুড়ে লাগু মহামারী আইন। রাজ্যের ক্ষেত্রে প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তর থেকে সবাইকে অনুরোধ করা হয়েছে লকডাউনকে কেউ যেন হালকাভাবে না নেয়। প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে বেরোচ্ছেন কিনা তা দেখার দায়িত্ব পড়েছে পুলিশের উপর। কিন্তু সেই পুলিশের বিরুদ্ধেই 'বাড়াবাড়ি'র অভিযোগ রাজ্যবাসীর। লক ডাউন পালনের নামে কোথাও পুলিশকে দেখা গিয়েছে মানুষকে লাঠিপেটা করতে, কোথাও সবজির ঝুড়িতে লাথি মারতে। কিন্তু বিষয়টি ভালভাবে নেয়নি নবান্ন। তাই 'বাড়াবাড়ি'র অভিযোগে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে এখনও পর্যন্ত রাজ্যের ১২জন পুলিশকর্মীকে 'ক্লোজ' করেছে রাজ্য পুলিশ। চারজনের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে বিভাগীয় তদন্তও।
রাজ্যে লকডাউন চালু হওয়ার পর থেকেই পুলিশের বিতর্কিত ভূমিকার বেশ কিছু ভিডিও বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরতে দেখা গিয়েছে। ভিডিওতে কোথাও দেখা গিয়েছে ব্যাগ হাতে বাজারে যাওয়া মানুষকে 'হেনস্থা' করছে পুলিশ, কোথাও আবার সবজির ঝুড়িতে লাথি মেরে সব ফেলে দেওয়া হচ্ছে সবজি। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এরকম আরও একাধিক অভিযোগ উঠে এসেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে, যেখানে লক ডাউন পালন করানোর নামে পুলিশ 'অমানবিক' আচরণ করেছে বলে অভিযোগ।
বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। রাজ্য পুলিশ সূত্রে খবর, মোট ১২ জন পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাদের প্রত্যেকেই 'ক্লোজ' করা হয়েছে এবং চারজনের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে বিভাগীয় তদন্ত। এই ১২ জনের মধ্যে একজন আইসি রয়েছেন, রয়েছেন পাঁচজন সাব-ইন্সপেক্টর, বাকি ছ'জন মহিলা ও পুরুষ কনস্টেবল। 'বাড়াবাড়ি'র অভিযোগ এসেছে বেশকিছু সিভিক ভলেন্টিয়ারের বিরুদ্ধেও। রাজ্যের এক পুলিশকর্তা বলেন, "যারা ভুল করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।" এই ১২ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে রাজ্যের সবস্তরের পুলিশকর্মীকে বার্তা দিতে চাইল নবান্ন। কোথাও শাসনের নামে 'দাদাগিরি'র অভিযোগ এলে তা যে কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না, তা বোঝানোর চেষ্টা করল নবান্ন।
রাজ্য পুলিশের এক পদস্থকর্তা এ প্রসঙ্গে জানান, ক্লোজ করার অর্থ তাঁকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ডিউটি থেকে বসিয়ে দেওয়া। এই পর্বে তাঁকে অফিসে কোন কাজ দেওয়া হবে না। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রাথমিক তদন্ত শুরু হবে। তদন্তে দোষ পাওয়া গেলে পরবর্তীতে সাসপেন্ড করা হতে পারে। যে চারজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে তাঁদেরও ডিউটি দেওয়া হবে না।
সাধারণ মানুষের অভিযোগ, বাজার, মুদি দোকান, ওষুধের দোকান খোলা রাখা হয়েছে লকডাউন পর্বে। সেইসব জায়গায় কোন প্রয়োজনে যেতে গেলেও পুলিশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাধা দিচ্ছে। পথ আটকাচ্ছে। এমনকী মারধরও করছে। রাজ্যের প্রত্যেকটি থানায় পুলিশের একাধিক টিম অলি-গলিতে নজরদারি চালাচ্ছে যাতে কেউ কোথাও বাড়ির বাইরে বেরিয়ে জটলা তৈরি করতে না পারে। কিংবা মানুষ লকডাউনকে হালকাভাবে নিচ্ছে কিনা তাও দেখছে পুলিশ। কিন্তু সেখানেই উঠছে বাড়াবাড়ির অভিযোগ। তারই ফল স্বরূপ পড়তে হল শাস্তির মুখে।
এখন বাংলা - Ekhon Bengla | খবরে থাকুন সবসময়