কাঁটাতারের ওপারে ঝরছে ধান, জমিতে না যেতে পেরে ক্ষোভে রাস্তা অবরোধ কৃষকদের



কাঁটাতারের ওপারে ঝরছে ধান, জমিতে না যেতে পেরে ক্ষোভে রাস্তা অবরোধ কৃষকদের | এখন বাংলা - Ekhon Bengla




 লকডাউনের সময়ে চাষিদের কাজে ছাড় দিয়েছে রাজ্য সরকার। ফসল তোলার সময়ে কৃষিকাজ বাধাপ্রাপ্ত হলে, পরবর্তীতে খাদ্যশস্যের জোগানে সমস্যা হতে পারে। সে কথা ভেবেই কৃষিকাজে ছাড় দেওয়া হয়েছে। লকডাউনের সময়সীমা বাড়িয়ে কৃষকদের কাজে সুবিধা দেওয়া নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে কেন্দ্রও। কিন্তু তারই মধ্যে কাজে বাধা পেয়ে সমস্যায় বনগাঁর কয়েক হাজার কৃষক। কাঁটাতারের ওপারে থাকা জমিতে চাষের কাজ করতে যেতে পারছেন না, ফলে সমস্যায় তাঁরা।




চলছে লকডাউন। তাই কাঁটাতারের বাইরে থাকা জমিতে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে বিএসএফ। কিন্তু নিজেদের জমিতে গিয়ে ফসলের পরিচর্যা ও ফসল কাটার দাবিতে মঙ্গলবার সকালে বনগাঁর বাগদায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভে নামলেন শতাধিক চাষি। তাঁদের বক্তব্য, জমিতে রয়েছে ধান, পাট, তিল। কয়েক দিনের মধ্যেই ধান কাটতে হবে। এখন জমিতে সেচের জল দিতে না পারলে নষ্ট হয়ে যাবে ধান। ইতিমধ্যেই কয়েকদিন জল না পেয়ে ধান ঝরতে শুরু করেছে বলে আক্ষেপ করছেন চাষিরা।




জানা গিয়েছে, বনগাঁ এবং বসিরহাট মহকুমার কয়েক হাজার হেক্টর জমি রয়েছে কাঁটাতারের ওপারে। এপারে যেমন চাষিদের জমি আছে, তেমনই কাঁটাতারের ওপারেও প্রচুর চাষাবাদের জমি রয়েছে তাঁদের। প্রতিদিন সেই জমিতে কৃষকরা চাষ করতে যান৷ পরিচয়পত্র দেখিয়ে ওই জমিতে ঢুকে চাষ করে ফিরে আসেন তাঁরা। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। করোনা আতঙ্কের জেরে দেশজুড়ে লকডাউনের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার কাঁটাতারের ওপারে যাতায়াতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে৷ সেই নির্দেশের পর থেকেই নিয়ম মেনে স্থানীয় চাষিদের সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় যেতে বাধা দিচ্ছে বিএসএফ। ফলে বিপাকে পড়েছেন বয়রা, বাগদা, পেট্রাপোল, গাইঘাটা, স্বরূপনগর, হাসনাবাদ-সহ সীমান্ত এলাকার কয়েক হাজার চাষি। ফসল নষ্ট হওয়ার আতঙ্কে ভুগছেন তাঁরা। ইতিমধ্যে নিজেদের সমস্যার কথা জানিয়ে বনগাঁ, বাগদা-সহ সংশ্লিষ্ট বিডিও, পঞ্চায়েত অফিসে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন চাষিরা। কিন্তু সুরাহা হয়নি কিছুই।




বৃদ্ধ চাষি রমেশ মণ্ডলের কথায়, “তারকাটা ওপারের জমিতে ধানে রয়েছে। জল দিতেই হবে৷ কিছু জমির ধান ঝরে পড়ছে। আমাদের যাওয়ার অনুমতি না দিলে ফসল সব নষ্ট হয়ে যাবে৷ আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে পড়ব আমরা।” চাষিদের সমস্যার বিষয়টি জানতে পেরে দিন কয়েক আগে উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক মহকুমা শাসককে চিঠি লিখে সমাধানের আবেদন জানান। তিনি বলেন, “সীমান্তের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় চাষ করতে গিয়ে বিএসএফের বাধার মুখে পড়েছেন চাষিরা। ওপারে ধান-সহ বিভিন্ন ফসল রয়েছে। বিধিনিষেধ প্রত্যাহার না করা হলে চাষিরা ব্যাপক দুর্ভোগে পড়বেন।”




মঙ্গলবার সকালে বাগদা বাজার সংলগ্ন বনগাঁ-বাগদা সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ শুরু করে শতাধিক চাষি। প্রায় ঘন্টা খানেক ধরে চলে অবরোধ। খবর শুনে ছুটে আসেন বিধায়ক দুলাল বর। তিনি অভিযোগ করেন, বিএসএফ চাষি ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছে। সামাজিক দূরত্ব মেনে চাষিদের জমিতে যাবার অনুমতি দেওয়ার দাবি জানান তিনি। বনগাঁর মহকুমা শাসক কাকলি মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “কেন্দ্রের নির্দেশে সীমান্ত সিল করা হয়েছে। চাষিরা সমস্যায় পড়েছেন, জানি। কীভাবে ওঁদের সাহায্য করা যায়, সেটা আমরা আলোচনা করে দেখছি।”




         


এখন বাংলা - Ekhon Bengla | খবরে থাকুন সবসময়



নবীনতর পূর্বতন