যত্রতত্র থুতু ঠেকাতে রাজ্যগুলিকে গুটখা-খৈনি-পানমশলা নিষিদ্ধ করতে নির্দেশ কেন্দ্রের



যত্রতত্র থুতু ঠেকাতে রাজ্যগুলিকে গুটখা-খৈনি-পানমশলা নিষিদ্ধ করতে নির্দেশ কেন্দ্রের | এখন বাংলা - Ekhon Bengla




শুভঙ্কর বসু: মুখে মাস্ক আর সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি করোনা সংক্রমণ রোধে জরুরি যত্রতত্র থুতু না ফেলা। একথা মাথায় রেখে এবার গুটখা, পানমশলা, খৈনি, এবং জর্দার মত লালারস সৃষ্টিকারী তামাকজাত দ্রব্য বা চিউইং টোবাকোর ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ করতে রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিল কেন্দ্র। এনিয়ে সমস্ত রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। নবান্নেও পৌঁছেছে সেই নির্দেশিকা। চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে এখন মহামারি আইন চালু রয়েছে।




মহামারি আইন ছাড়াও ভারতীয় দণ্ডবিধি এবং ফৌজদারি বিধি অনুযায়ী করোনা ভাইরাস ঠেকাতে রাজ্যগুলির হাতে পর্যাপ্ত ক্ষমতা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যত্রতত্র থুতু ঠেকাতে গুটখা, পানমশলা, খৈনি, এবং জর্দার মতো ধোঁয়াহীন চিউইং টোবাকোর ব্যবহার বন্ধ করতে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হোক। 


লকডাউন উঠে গেলেও করোনা ভাইরাস ঠিক কতদিন কামড় বসাবে তা এখনই হলফ করে বলতে পারছেন না অতি বড় বিশেষজ্ঞরাও। ফলে এখনই যত্রতত্র থুতু ফেলার অভ্যাস বন্ধ না করা গেলে বিপদ আরও ঘনাবে বলেই তাঁদের মত। এনিয়ে অবশ্য ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার যত্রতত্র থুতু না ফেলতে জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক প্রচার চালানো হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও একাধিকবার এ বিষয়ে জনসাধারণকে সাবধান করেছেন। কিন্তু লালারস সৃষ্টিকারী এসব তামাকজাত দ্রব্য নিষিদ্ধ করতে রাজ্যের তরফে এখনও কোনও নয়া নির্দেশিকা জারি হয়নি।




যদিও সেই ২০১৩ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গে আইন করে গুটখা নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু রাজ্যে পান মশলা ও জর্দার ব্যবহার এখনও নিষিদ্ধ না হওয়ায় কার্যত গুটখার দাপট অব্যাহত। বলা চলে কারবারে নতুন দিগন্ত খুলে ফেলেছে গুটখা নির্মাতারা। মূলত সুপারি আর জর্দার সঙ্গে প্যারাফিন ওয়াক্স ধমিশিয়ে তৈরি হত গুটখা। রাজ্যে আইন করে গুটখা নিষিদ্ধ হওয়ার পর পরই গুটখার মিশ্রণ থেকে জর্দা ছেঁটে ফেলা হয়। তখন চেনা গুটখা হয়ে দাঁড়ায় নিরীহ পান মশলা। আর পাশাপাশি জর্দা বিক্রি শুরু হয় অন্য একটি ছোট প্যাকেটে। আর পান মশলা কিংবা জর্দা দুটোর কোনটাই যেহেতু এ রাজ্যে নিষিদ্ধ নয় তাই নয়া কলেবরে আরও ভয়ঙ্কর রূপে আত্মপ্রকাশ করে গুটখা। যার দাপট এখনও বজায় রয়েছে। মুদি দোকান থেকে সাধারণ পান বিড়ি সিগারেটের দোকান, সর্বত্রই গুটখার রমরমা।




তাছাড়া খৈনির মত লালা রস সৃষ্টিকারী তামাকের ব্যবহার তো রয়েছেই। তাই পানমশলা, জর্দা ও খৈনির মত চিউইং টোবাকোর বিক্রি এখনই পুরোপুরি নিষিদ্ধ না করা গেলে যত্রতত্র থুতুর হাত থেকে রেহাই নেই। আর রেহাই নেই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকেও। কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী অরিন্দম দাস বলেন, “পান মশলা পুরোপুরি নিষিদ্ধ করতে দেশের বিভিন্ন আদালতে একাধিক সময় একাধিক মামলা হয়েছে। কিন্তু এর সঙ্গে যেহেতু কেন্দ্র সরকারের বিপুল রাজস্ব ও নামি কোম্পানিগুলির স্বার্থ জড়িত ছিল তাই ব্যাপারটা অত সহজ হয়নি। এটা ভাল যে এবার করোনার দাপটে কেন্দ্র সরকারের হুঁশ ফিরছে।”




কেন্দ্রের তরফে চিঠি পাওয়ার পরই বিহার, ঝাড়খণ্ড, তেলেঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, মহারাষ্ট্র, নাগাল্যান্ড এবং অসম সরকার পানমশলা, জর্দা এবং খৈনির ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ করতে নির্দেশিকা জারি করেছে। এখন দেখার এরাজ্যে কবে পুরোপুরি চিউইং টোবাকোর ব্যবহার নিষিদ্ধ হয়।




         


এখন বাংলা - Ekhon Bengla | খবরে থাকুন সবসময়



নবীনতর পূর্বতন