'ভাইরাস নিয়েই আমাদের বাঁচতে শিখতে হবে', এখন বুলি কেন্দ্রের



'ভাইরাস নিয়েই আমাদের বাঁচতে শিখতে হবে', এখন বুলি কেন্দ্রের




 তিন দফায় ৪৪ দিন ধরে দেশজুড়ে লাগাতার লকডাউনের পর, কেন্দ্রের মোদী সরকার অবশেষে বলছে, 'ভাইরাস নিয়েই আমাদের বাঁচতে শিখতে হবে।' তৃতীয় দফায় লকডাউন চলাকালীন শুক্রবার, ৮ মে এমনটাই ঘোষণা করল কেন্দ্র। দেশে করোনা আক্রান্তের পরিসংখ্যান দিতে গিয়ে শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল ঘোষণার ঢঙেই এ কথা বলেন। তৃতীয় দফা শেষ হলে, লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়বে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সব রাজ্যে একই সঙ্গে লকডাউন উঠবে নাকি ধীরে ধীরে কয়েক ধাপে, তা জানার জন্য আরও কিছুদিন ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে। তবে, স্বাস্থ্যমন্ত্রকের যুগ্মসচিবের বক্তব্যের ইঙ্গিত অনুযায়ী, লকডাউনের মেয়াদ না বাড়ার সম্ভাবনাই বেশি। দেশের অর্থনীতি ও গরিব দিন-আনা দিন-খাওয়া মানুষগুলোর কথা ভেবে ভারতের পড়শি দেশ পাকিস্তান শনিবার থেকেই লকডাউন তুলে নিচ্ছে। যদিও, পাকিস্তানে স্কুল-কলেজ খুলছে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও ঘোষণা করেছেন, মানুষ মরলেও লকডাউন তাঁরা এ বার প্রত্যাহার করার কথাই ভাবছেন।




লব বলছেন, সংক্রমণের হার দ্বিগুণ আগের থেকে সময় লাগছে বেশি। অর্থাত্‍‌, পরিস্থিতি ক্রমে উন্নতি হচ্ছে। তিনি পরিসংখ্যানও দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান অনুযায়ী শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ভারতে করোনা আক্রান্ত বেড়ে হয়েছে ৫৬ হাজার ৩৪২ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ১৬,৫৪০ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। সুস্থতার হার ২৯.৩৬ শতাংশ।




তিনি এ-ও জানিয়েছেন, ভারতে মোট করোনা আক্রান্তের মাত্র ৩.২ শতাংশ রোগীকে অক্সিজেন সার্পোটে রাখতে হয়েছে বলে শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া, ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (ICU)-এ রয়েছেন আক্রান্তের ৪.৭ শতাংশ। ভেন্টিলেটরে থাকা করোনা রোগীর শতকরা হার আরও কম। মাত্র ১.১ শতাংশ।




covid19india.org এর ট্র্যাকারের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫৬ হাজার নয়, ৫৯ হাজার ৬৪২। এ ভাবে চললে, ১৮ মে'র মধ্যে এই সংখ্যাটা পৌঁছতে পারে ১ লক্ষ ১৯ হাজার ২৮৪-তে।




দিল্লি AIIMS-এর ডিরেক্টর ডাক্তার রণদীপ গুলেরিয়া বৃহস্পতিবারই জানিয়েছেন, ভারতে করোনা জুন-জুলাইয়ের মধ্যে পিকে উঠবে। তবে, কী করব আর কী করব না-- করোনা সংক্রান্ত এই নির্দেশিকা মনে চললে, মৃত্যুর শিখরে আমরা না-ও পৌঁছতে পারি। এমত অবস্থায় জুন-জুলাইয়ের আগে লকডাউন উঠে গেলে, ভারতে করোনা-চিত্র ভয়াবহ আকার নিতে পারে। এম ন আশঙ্কা অনেকেরই। তবে, এ নিয়ে বিশেষজ্ঞ মহলে দ্বিমত আছে। মতবিরোধ থাকলেও ঝুঁকি যে থাকছেই, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞমহলে দ্বিমত নেই।




দিল্লি এইমসের ডিরেক্টরের কথা অনুযায়ী, যদি জুন-জুলাইয়ে ভারতে করোনা সংক্রমণ পিকে ওঠে, তা হলে আক্রান্তের সংখ্যা কোথায় গিয়ে পৌঁছতে পারে? লবের বক্তব্য, বিভিন্ন সংস্থা বিভিন্ন রিপোর্ট দিয়েছে। কয়েক হাজার থেকে কয়েক কোটি। এ প্রসঙ্গেই তিনি জানান, ২১৬ জেলা থেকে এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের খবর নেই। গত ২৮ দিনে ৪২ জেলায় নতুন করে করোনার সংক্রমণ হয়নি। আবার ২৯ জেলায় ২১ দিনের মধ্য়ে কোভিড-১৯ পজিটভ ধরা পড়েনি। ১৪ দিনের মধ্যে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েনি এমন জেলার সংখ্যা ৩৬টি।




ভাইরাস নিয়েই বাঁচার প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, 'আমরা যখন ভাইরাস নিয়েই বাঁচতে শেখার কথা বলছি, সেখানে কিছু গাইডলাইন বা নির্দেশিকা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কী ভাবে আমরা নিজেদের প্রাণঘাতী ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা করব, সে নির্দেশিকা থাকবে। আচরণগত পরিবর্তনের সঙ্গে আমাদের অভ্যস্ত হয়ে উঠতে হবে।'





এখন বাংলা - Ekhon Bengla | খবরে থাকুন সবসময়


Source : BanglaSonbad


নবীনতর পূর্বতন