অপরাধ রাস্তা পরিষ্কার করা! সাফাইকর্মীকে কুড়ুল হাতে আক্রমণ উত্তপ্ত জনতার
আর কবে বুঝবে সমাজ? দেশের যে সমস্ত করোনা-যোদ্ধা নিজের প্রাণের পরোয়া না করে অন্যকে সুস্থ করতে বদ্ধপরিকর, তাঁদেরই বারবার হেনস্তার মুখে পড়তে হচ্ছে। কখনও চিকিৎসকদের মারধর করা হচ্ছে তো কখনও হেনস্তার শিকার নার্সরা। এবার মধ্যপ্রদেশে চূড়ান্ত অপদস্ত করা হল এক সাফাইকর্মীকে।
শুক্রবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে একটি ভিডিও। যেখানে দেখা যায়, মধ্যপ্রদেশের দিওয়াস জেলায় এক সাফাইকর্মীকে গণধোলাই দেওয়া হচ্ছে। টেনে ছিঁড়ে দেওয়া হয় তাঁর পোশাক। এমনকী ভিড় জনতার মধ্যে থেকে একজন কুড়ুল নিয়ে এগিয়ে আসে তাঁর দিকে। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভরতি ওই যুবক। কিন্তু তাঁর অপরাধ কী? কেন এমন নির্মমভাবে সকলে মিলে তাঁর উপর আক্রমণ করল? তাঁর অপরাধ একটাই। ওই এলাকার রাস্তাঘাট পরিষ্কার করতে এসেছিলেন তিনি।
সপ্তাহখানেক আগেই করোনা স্ক্রিনিংয়ে গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন স্থানীয়দের হাতে। গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করা হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। কিন্তু সমাজের কিছু মানুষের তা থেকেও শিক্ষা হয়নি। তারই জলজ্যান্ত উদাহরণ মধ্যপ্রদেশে। চড়-থাপ্পড়, লাথি-লাঠি- সাফাইকর্মীকে মারধরে কিছুই বাকি রাখল না উত্তপ্ত জনতা। শেষে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ আধিকারিক সজ্জন সিং বলেন, “কয়লা মহল্লায় পরিচ্ছন্নতার কাজে গিয়েছিলেন ওই সাফাইকর্মী দীপক এবং তাঁর সহকারীরা। সেই সময়ই আদিল নামের এক যুবক তাঁদের দিকে কুড়ুল নিয়ে তেড়ে যায়। তাকে বাধা দিতে গিয়েই চোট পান দীপক। আমরা আদিলের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করেছি।” ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে আদিলকে। তবে ঘটনার পর থেকেই তার ভাই পলাতক। তবে এই প্রথম নয়, এর আগে ভোপালে লকডাউনে কর্মরত এক পুলিশ আধিকারিককে মারধর করা হয়েছিল। সেই ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ইতিমধ্যেই মধ্যপ্রদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩০০ ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৬৯ জনের। করোনার চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করেই জরুরি পরিষেবা দিয়ে চলেছেন স্বাস্থ্যকর্মী, সাফাইকর্মী, পুলিশ। অথচ বারবার জনতার রোষানলে পড়তে হচ্ছে তাঁদেরই। যা নিঃসন্দেহে অত্যন্ত লজ্জাজনক।
এখন বাংলা - Ekhon Bengla | খবরে থাকুন সবসময়